Monday, 30 November 2015

আকর্ষণ


সূর্য ঘোরে নিজের ঘোরে, ঘোরে চন্দ্র ধরা ।
কেন ঘোরে শুধু শুধু ?
বুজলি নাতো তোরা ।।

সূর্য হল মা পৃথিবীর, পৃথিবীটা ছা ।
পৃথিবীটা তাই কখনো,
ঘোরা থামায় না ।।

চাঁদ হল এক ছোট্ট শিশু, পৃথিবী তার মা ।
এবার বুজলি ,
কেন চাঁদও কোথাও পালায় না ?

সবাই থাকে মায়ের কাছে, ঘোরে আশেপাশে ।
আকর্ষণ না বিকর্ষণ,
যায় আসে কি তাতে ?

ওরা সবাই জড় বস্তু , অজান্তেই সব ঘোরে ।
তোরা তো সব জীবনমুখী,
বুঝবি কেমন করে ?

ছিঁড়ল গ্রহ বাঁধন যখন, থাকল না আর ঘরে ।
গ্রহ থেকে হল পার্টিকেল,
রইল না সৌর সংসারে ।।

যাচ্ছিস তুইও ছেড়ে চলে, তোরই আকর্ষণ ।
পরিচয়হীন হবি এবার,
হারাবি আপনজন ।।
            
                 - Moumita Sahu

Sunday, 29 November 2015

ঘরবাড়ি

আমার যেটা বাসাবাড়ি,
তোমার সেটা ঘর ।
ভাড়া দিয়ে থাকি আমি ,
তুমি দেশান্তর ।।

বাড়ি বলল প্রথম আমায়,
‘তুমি তো আমার পর’ ।
আমি বললাম,
‘চার দেওয়ালের আপন কিবা পর’ !

সেদিন থেকে ঘরটা তোমার,
থাকলো চুপ চাপ ।
আমিও থাকি আমার মতো,
যে যার মতোই থাক ।।

বেশ কিছু কাল কাটলে পরে,
হলাম সংসারী ।
তোমার ঘরেই এখনো আছি,
আমরা সুখসারি ।।

তোমার ঘরের ভাব হয়েছে,
আমার সারির সাথে ।
বাসার প্রতি সারির একটা,
ভালবাসা আছে ।।

সুখ ও সারির দুটো ছানা,
খেলে লুকো চুরি ।
তোমার ঘরের কোনায় কোনায়,
আমার বাসাবাড়ি ।।

সপ্নে আমি রোজই দেখি,
নিজের সুখের ঘর ।
সেটা দেখতে একই রকম,
যেমন তোমার ঘর ।।

শেষকালে এক বিশাল মাপের,
গড়েছি নিজের ঘর ।।
বাসা বলল , ‘ তুমিও আমায়,
করলে শেষে পর ’!

এখন আমি নিজের ঘরে,
আমার অবসর ।
কলিং বেলের শব্দে আমার,
ভাঙল ঘুমের ঘোর ।।

অচেনা সব লাগে চোখে,
চিনতে চেষ্টা করি ।
এইটাই কি আমার ঘর ?
নাকি বাসাবাড়ি !

-Moumita Sahu


Friday, 27 November 2015

নীল সাদা সবুজ

নীল রঙা শাড়ি তার,
পাড়ে সাদা ফুল ।
আঁচল সবুজে ঢাকা ,
দুলছে দোদুল ।।

সবুজ আঁচলে আজ,
শত ছিন্ন ।
অন্য সুতা নাই তার,
সাদা ভিন্ন ।।

সেলাই করেছে শুরু,
নীল জমি থেকে ।
একদিন সাদা সুতায়,
যাবে সে ঢেকে ।। 

              -Moumita Sahu

আগুন

আগুন! আগুন! আগুন!
আর, তুমি ভাবছো ফাগুণ!

ক্ষুধায় শিশুর পেটে আগুন,
কারো চোখের জলে আগুন,
আর, তুমি ভাবছো ফাগুণ!

কিশোর বেলার সপ্নে আগুন,
যৌবনের সংকল্পে আগুন,
আর, তুমি ভাবছো ফাগুণ !

খরায় চাষির মাঠে আগুন,
শিল্পীর কল্পনাতে আগুন,
আর, তুমি ভাবছো ফাগুণ!

বুড়ো বাবার আশায় আগুন,
বুড়ি মায়ের স্নেহে আগুন,
আর, তুমি ভাবছো ফাগুণ!

শোষক শ্রেণীর চোখে আগুন,
শাসক শ্রেণীর হাতে আগুন,
আর, তুমি ভাবছো ফাগুণ!

বক্তব্যের ভাষায় আগুন,
শ্রোতায় কানের ভেতর আগুন,
আর, তুমি ভাবছো ফাগুণ!

লেখকের কলমে আগুন,
পাঠক মনের মধ্যে আগুন,
আর, তুমি ভাবছো ফাগুণ!

লোভী লোলুপ জিভে আগুন,
নির্যাতিতার শরীরে আগুন,
আর, তুমি ভাবছো ফাগুণ!

তোমার চারিপাশে আগুন,
খেলছ তুমি নিয়ে আগুন,
আর, তুমি ভাবছো ফাগুণ!

                    - Moumita Sahu

কালী কাহিনী

টুকটুকে বউ এলো কুচকুচে কালো ।
রং নিয়ে কি হবে ? কাজে কামে ভালো ।।

এক গাছি চুল আছে, কোমর ছাড়ায় ।
খয়ের পানেতে দিয়ে খিলি পান খায় ।।

ঘুমায় সাঁজের বেলা, উঠে পড়ে ভোরে ।
কোমরে কাপড় গুঁজে, কাজে নেমে পড়ে ।।

ধান সেদ্ধ, মুড়ি ভাজা, রেঁধে ফেলে ভাত ।
যেন দুটি নয় তার, আছে চার হাত ।।

মা,মাসি,কাকী,জেঠী কেউ বা ডাকে কালী।
আসল নাম কি ছিল তার, নিজেই গেছে ভুলি ।।

পালা শুনতে গেল শাশুড়ি, সঙ্গে পাড়াপড়শি ।
সন্ধ্যে পরেই ঘুমলো কালী, সেদিন চতুর্দশী ।।

মধ্যরাতে পড়ল ডাকাত, কোরে হারে রে রে ।
ওমনি কালী উঠে দাঁড়ায়, বলল ওখানে কেরে ?

গাহনাগাঁটি টাকাকড়ি নিল কাঁসার বাসন ।
কালী দাঁড়াল রুখে যখন, ছিনল তারি বসন ।।

রুদ্র কালী তুলল খড়গ, করল তাদের ক্ষান্ত ।
মা বলে কেউ শান্ত হল, কেউ হল দিক ভ্রান্ত ।।

পালাল কোন শয়তান এক, ধেয়ে গেল তার পিছে।
হাতে খড়গ কাটা মুণ্ডু, দেখল না সে নিচে ।।

নেশার ঘোরে ভাসুর ঠাকুর দুয়ারেতে পড়ে ।
গুরুঞ্জ্যানহীন কালী তখন দাঁড়ায়ে তাঁরি ধড়ে ।।

গ্রামবাসী সব এলো যখন, থেমেছে সকল যুদ্ধ ।
লজ্জায় জিভ কাটল কালী, সবাই হল মুগ্ধ ।।

সেদিন হল কালীর পূজা, কালী সবার মা ।
কেউ বা বলে, না! না! এত লক্ষ্মী প্রতিমা ।।

মা হয়ে তুই অভয় দিলি, শয়তানেরে শিক্ষা ।
এখনও তবু তোর মেয়েরা করে প্রানের ভিক্ষা ।।

শক্তি দে মা, সাহস দে মা, করি শত্রুর ক্ষয় ।
ভক্তি ভরে প্রনমি তোরে, করব অসুর জয় ।।
 
                                 -Moumita Sahu




ভালো হয়ে থেকো

কান্নাকাটি করেনা সোনা
হাসি মুখে মাখো ।
লক্ষ্মী হয়ে খেয়ে ঘুমাও
ভালো হয়ে থেকো ।।

অ আ বলো জোরে জোরে
একের নামতা লেখো ।
প্রথম দিনে স্কুলে গিয়ে
ভালো হয়ে থেকো ।।

একা কোথাও বেরিওনা
ঘরের ভেতর থেকো ।
বন্ধু বান্ধব দুরেই রেখো
ভালো হয়ে থেকো ।।

শরীর তোমার বড়ো হবেই
মনকে ধরতে শেখো ।
মনকে বাঁধো বুদ্ধি দিয়ে
ভালো হয়ে থেকো ।।

লেখা পড়া ভালোই হোল
চাকরি একটা খোঁজো ।
বিদেশ বিভূঁই যেওনা যেন
ভালো হয়ে থেকো ।।

চাকরি বাকরি হোল যখন
এবার বিয়ে করো ।
একা থাকা কঠিন ব্যাপার
ভালো হয়ে থেকো ।।

একটা বছর ফুরিয়ে গেলো
এক নিমেষের মতো ।
এবার একটা সন্তান নাও
ভালো হয়ে থেকো ।।

সন্তান সব বড় হোল
তাদের কথা শুনো ।
বেশি কথা বোলোনা যেন
ভালো হয়ে থেকো ।।

কষ্ট কিছু হোল না পেতে
ঘুমের ঘোরেই গেলো ।
যেথায় থাকো সুখে থেকো
ভালো হয়ে থেকো ।।

                          -Moumita Sahu



সূর্যধরা

ঘুরছি আমি নিজের মতো
চলছে বিস্ফোরণ ।
তপ্ত আলো দেব বলেই
জ্বলছি সারাক্ষণ ।।

শিশু পৃথিবী জন্ম নিল
আমার শরীর হতে ।
তোমরা সকল পরগাছা দল
জন্মালে তার বুকে ।।

মঙ্গলেও জন্মেছিলে
বেড়েছিল খুব বাড় ।
সৌরঝড়ে শেষ করেছি
নেই তার আর সাড় ।।

চোষক তুমি শোষক তুমি
কেটেছ ছিঁড়েছ খুঁড়েছ ।
লক্ষ কোটি সন্তান দিয়ে
আষ্টেপ্রিষ্টে ধরেছ  ।।

তুমি তো বেশ ঘুরে বেড়াচ্ছ
ভেবেছ নিজেকে জীবিত ।
পৃথিবীটা ঘুরছে জেনেও
ভাবছো কেন সে মৃত?

জীবন্ত দেহে আধাত করছ
কখনো থামোনি তুমি ।
তোমার শরীর কাটি ছাঁটি যদি
যখন জীবিত তুমি ।।

তোমার শরীরে খুঁড়ব গর্ত
কোথাও বানাব খাল ।
রক্ত দিয়ে নদী বানাব
বুকে চালাব হাল ।।

কত যন্ত্রণাতে আমার পৃথিবী
কখনো যদি নড়ে ।
নিজের ঘরেতে মরেছ তুমি
পাথর চাপা পড়ে ।।

সেবার পৃথিবী কেঁদেছিল খুব
বোধহয় তুমি ভোলোনি ।
নাম দিয়েছ মূর্খ তোমরা
আয়লা কিংবা সুনামি ।।

রক্তাত দেহে শিশু ধরা মোর
যন্ত্রণাতে কাঁপে ।
একদিন তাকে মুক্তি দেব
টেনে নেব মোর বুকে ।।

                   -Moumita Sahu






শুকু

সন্ধ্যা তারা সন্ধ্যা তারা ,
পশ্চিমেতে দিলে ধরা ।

ঘুম ভাঙলে দেখি ভোরে ,
পুব আকাশে গেছ সরে ।

তোমায় দেখে চিনেছে দিক ,
জাহাজ নিয়ে ফিরল নাবিক ।

ভ্রান্ত পথিক তোমায় দেখে ,
পা বাড়াল বাড়ির পথে ।

ছোট্ট খোকা মায়ের কোলে ,
জানলো শুক তারা বলে ।

বইয়ের পাতায় সবাই জানে ,
নক্ষত্র না, গ্রহ নামে ।

শুকতারা না সন্ধ্যা তারা ,
শুক্রগ্রহ বলে তাঁরা ।

আকাশ ভরা আলোর মাঝে ,
তোমার যে এক চমক আছে ।

জ্বলজ্বলে ঐ আকাশের গায় ,
তাই না দেখে তাক লেগে যায় ।

হোলই বা ধার করা আলো ,
আর কেই বা পথ দেখাল?

তুমিই আমার সেরা তারা ,
ঘরের তারা পথের তারা ।

সবাই ভালবেসে তোমায় ,
শুকু বলে ডাক দিয়ে যায় ।
           
                      - Moumita Sahu


মা


ওদিকে যেওনা তুমি, পড়ে যেতে পারো ।
পড়ে গেলে, ছুটে গিয়ে হাত খানি ধরো ।।

ভুল কত করলাম, নাই তার কুল ।
বুঝতে শেখালে তুমি ঠিক আর ভুল ।।

বকেই শাসন হয়, মারো নাতো তুমি ।
তাতেই ভীত হয়ে গটিসুটি আমি ।।

লেখাপড়া জরুরি বোঝালে যে কতো ।
বড়ো হয়ে যেন হই বাবার মতো ।।

ছোটদের স্নেহ করো, বড়দের মান ।
তাইতো সকলে করে তোমার সম্মান ।।

ভুল যদি কর তুমি মেনে নাও তা ।
ভুল না করলে তুমি কভু মান না ।।

মাথা উঁচু করে বাঁচো সত্যের সাথে ।
প্রশয় দাও নাকো অন্যায় পথে ।।

সংসার সন্তান তোমারই জীবন ।
শখ আহ্লাদ সবই দিলে বিসর্জন ।।

কড়া কথা বলো তুমি সোজাসুজি ভাবে ।
বছর বছর ধরে বুকে তাই বাজে ।।

পুরনো কথা সব মনে করে রাখ ।
অনুতপ্তেরে কভু ক্ষমা কারো নাকো ।।

বার মাস তের পূজা আর আছে হরি ।
ঠাকুর ঘরেতে বসো, নন্দলাল তরী ।।

ঘুরে ঘুরে কাজ কারো, পা যেন চাকা ।
একটু বসো যদি পায়ে হয় ব্যাথা ।।

রাখো তুমি সকলের খবরাখবর ।
না খেয়ে খাওয়াও সে আপন কিবা পর ।।

সুখে দুঃখে পথে ঘাটে যেখানেই থাকো ।
হাজার কষ্ট তুমি হাসি দিয়ে ঢাকো ।।

মানুষ কে মানুষ ভাব, নাই বা হোল নামী
কোন শিক্ষাই এর চেয়ে হবে নাতো দামী ।।

তোমার গরবে আমি গরবিনী মা
ভুলেও তোমার হাত কভু ছাড়ি না ।।

                            - Moumita Sahu






মক্ষীরানি

উঠে পড় উঠে পড়, ছুঁড়ি তোর বিয়ে ।
দিলাম ব্যাবস্থা করে, টাকাকড়ি নিয়ে ।।

মেয়ে হয়ে জন্মালি, অভাগীর ঘরে ।
মা কে খেলি আঁতুড়েই, বাপটা গেল জ্বরে ।।

কাকা কাকী ছিল বলে, হল তোর গতি ।
এগার না পেরোতেই, পেলি তুই পতি ।।

বাপের বয়সী বর পায় কয়জনা ?
রাজরানী হবি তুই ভাবনা রবেনা ।।

লাল শাড়ি, লাল চুড়ি, ঠোঁটে দিল লালি ।
নাই উলু নাই শাঁখ, নাই কনকাঞ্জলী ।।

ভোর রাতে বর এলো, বিয়ে হল তার ।
বলল কাকী, থাকিস ভালো, ফিরিসনাকো আর ।।

বসল গিয়ে বরের পাশে, চলল শেষে গাড়ি ।
বুঝল না সে, পড়েছে তার হাতে পায়ে বেড়ি ।।

পৌঁছল সে শ্বশুর বাড়ি, বরের হাত ধরে ।
শতেক মেয়ে ঝলমলিয়ে, করল বরণ তারে ।।

কত মেয়ে ঘিরে ধরে, যেন সে মক্ষীরানি ।
জন্ম থেকে এত খুশি, কক্ষনো দেখেনি ।।

সবাই গেল যে যার ঘরে, সন্ধ্যে হলে পর ।
ঘুম এলো তার চোখে শেষে, এলো না তার বর ।।

একদিন যায়, দুদিন যায়, প্রশ্ন জাগে মনে ।
জানলো সেথায় বর কেউ নেই, সবাই শুধু কনে ।।

মাস দুই সে কেঁদে ভাসাল, মলম দিল ঘায় ।
কালশিটে তার পড়ল গায়ে, দেখল না কেউ হায় ।।

বুড়ি হয়ে এখন রাতে শোনায় গল্পখানি ।
তাই না শুনে ঘুমিয়ে পড়ে নতুন মক্ষীরানি ।।

                                                             - Moumita Sahu

 



বন্ধু আমার

 বড় বড় চোখ তার, বোঁচা তার নাক ।
কোঁকড়ানো চুল আর, সরু সরু হাত ।।

টুকটুকে রঙ গায়ে, তড়বড়ে কথা ।
লোকজন নিয়ে তার, নেই মাথা ব্যাথা ।।

ছুটে ছুটে হাঁটে সে, বেছে বেছে খায় ।
খুব তার লোভ আছে সনুর ফুচকায় ।।

আশেপাশে ঘড়ি চাই, তবু হয় দেরি ।
নানা রঙ্গে লেখা চাই, সাথে চাটমুড়ি ।।

বাথরুম ভাবলেই মুখ হয় ভারি ।
সব কিছু সেরে ফেলে তাই তাড়াতাড়ি ।।

জানা জানা ডাকে কাকা, দাদু জ্যাঠা মাসি ।
মাছ মাংস চুরিয়ে খায়, দিয়ে দেয় ফাঁকি ।।

সাইকেল চড়ে সে, টিউশন যায় ।
চড়বে সে ক্যামনে ? উঁচু কিছু চায় ।।

দশজোড়া জুতো কেনে, অর্ধেক দামে ।
দোকানিকে বোঝাল সে, বউনীর মানে ।।

হেঁচে হেঁচে লাল হয়, আমি ভয় পাই ।
বলল, তুই গুনে রাখ, হাঁচির সাত ভাই ।।

পড়তে সে বসে না, ভুলো তার মন ।
কিছু সে চায়না আর, ঘুমই রতন ।।

বাসে গেলে, গা গুলিয়ে হয়ে যায় বমি ।
আমি ডাকি অনি বলে, ঘরে ডাকে মমি ।।

ট্রেনে বাসে ঘরে সে জানালাটা চায় ।
চকলেট মোড়কেও স্মৃতি হাতড়ায় ।।

চুপচাপ থাকা তার মনে হয় সাজা ।
অনর্গল বকে যাওয়া ঢের বেশি সোজা ।।

এত বছরে ও অনি বড় হোল না ।
বন্ধু আমার, তোর নাই তুলনা ।।

                                                 - Moumita Sahu

Thursday, 26 November 2015

দুষ্টু

নাম তার দুষ্টু, রেখেছিল মা।
তবু সে শান্ত কেন, কেউ জানে না ।।

রোজ রোজ স্কুলে যায়, রবিবার ছুটি ।
একা একা বাড়ী ফেরে হেঁটে গুটি গুটি ।।

মেঘ দেখে মাস্টার, বলে, যাও বাড়ী ।
সকলের কি মজা, দিল হুড়োহুড়ি ।। 

কালো মেঘ ঢাকা দিয়ে আকাশের জ্বর ।
তাই দেখে বাতাসও কাঁপে থর থর ।।

এক বাঁক ঘুরলেই ঘুঘু পুল পারে ।
দুষ্টু বসে পড়ে ধুলো মাটি ধারে ।।

হুহু করে হাওয়া বয়, মেঘ গর্জায় ।
টুপটাপ বারি ঝরে ঘুঘুর জলায় ।।

ছোট মাছ, ধোড়া সাপ চলে হেলে দুলে ।
মাথানত ঘাসগুলো ভাসে হাঁটু জলে ।।

দূরে ঐ কে আসে, বোধহয় কাকাই ।
দুষ্টুকে একা দেখে নিয়ে গেল তাই ।।

ফুটফুটে জ্যোৎস্না, রাতের আকাশ ।
জ্বর বুঝি ছেড়েছে, ছেড়েছে সে বাস ।।

ঘুম এসে দুষ্টুর চোখ পরে বসে ।
ঢুলু ঢুলু ঘুম চোখ বুজে তার আসে ।।

                             - Moumita Sahu